দুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা

mymensingh shop.com

দুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা
  • দুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা_img_0

দুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা

100 BDT
1

এ নিকৃষ্ট দুনিয়ার সাথে যে মুসলিম সম্পর্ক রাখে, এবং এর উপার্জনের পিছনে অত্যধিক মেহনত করে, দুনিয়ার সাথে রাখা এ সম্পর্ক তাকে অনেক ইবাদত বন্দেগী থেকে বঞ্চিত করে । এই সম্পর্কের কারনে সে দ্বীনের অনেক আবশ্যকীয় বিধি-বিধান পরিপূর্ণরূপে আদায় করতে‌ পারেই তো না বরং সময় মত সেগুলো আদায় করা তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামত নিকটে চলে এসেছে আর দুনিয়ার প্রতি মানুষের লোভ দিন দিন বেড়েই চলছে । ক্রমশই তারা আল্লাহ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
প্রিয় ভাই দুনিয়াতে মানুষের কত কিছুরই প্রয়োজন তবে এসব কিছু থেকে তিনটি জিনিস অন্য বস্ত্র ও বাসস্থানের প্রয়োজন পূরণই মানুষের জন্য যথেষ্ট। লোভ লালসায় পড়ে কেউ যখন প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত সম্পদ অর্জন করে আল্লাহ নির্দেশিত পন্থার প্রতি তোয়াক্কা না করে ভিন্ন পন্থায় তা অর্জন করে, তখন সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়।
আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিতে সহায়ক হবে, এ উদ্দেশ্য কেউ যদি দুনিয়া অর্জন করে তবে তা মন্দ নয় বরং তা উত্তম । কেননা এ সম্পদ অর্জন করলেই তো সে এর থেকে সদকা করতে পারবে। ব্যয় করতে পারবে দ্বীনি খাত সমূহে ইলমের প্রচার প্রসারে সে আর্থিক সহায়তা করতে পারবে , তাই এই সম্পদ তার জন্য নিয়ামত।
কিন্তু দুনিয়া অর্জন করার চেয়ে দুনিয়া বর্জন করা সালাফদের কাছে প্রাধান্য ছিল সবচেয়ে বেশি।
ওমর বিন খাত্তাবানা বলেন, দুনিয়া অর্জন নয় দুনিয়া বর্জনেয় রয়েছে দেহ মনের প্রশান্তি।
হাসান রহ বলেন ,
আমি এমন অনেক লোককে দেখেছি দুনিয়ার কিছু অর্জিত হলেও তারা আনন্দিত হতেন না। আবার দুনিয়ার কিছু হারিয়ে গেলেও আফসোস করতেন না।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ. এর ছোট একটি বাণী দুনিয়া-বিমুখতাকে যথার্থভাবে সংজ্ঞায়িত করে, দুনিয়া বিমুখতা হল উচ্চাকাঙ্ক্ষিত ধমন করা।

হে লোক সকল মৃত্যু তাক করা আছে তোমাদের দিকে, আশা-আকাঙ্কার ফাঁদ পাতা রয়েছে চলার পথে। সুতরাং সতর্ক হও তোমাদের বেষ্টন করে আছে দুনিয়ার ফেতনা । আজকের ভালো অবস্থা দেখে বিভ্রান্ত হয় না । ওচিরেই পরিস্থিতি বদলে যাবে দুনিয়া তোমাকে সংকীর্ণতায় নিপীড়িত করবে । ঠেলে দিবে বিলুপ্তির পথে।
যতক্ষণ দুনিয়া ভোগের পড়ুয়া করা তুমি ছেড়ে না দেবে, ততক্ষণ তোমার অন্তর অশান্তই থাকবে।
স্বল্প পুঁজিতেই কাটিয়ে দাও ছোট্ট এ জীবন । খানিক বাদেই তো বেঁচে যাবে বিদায় ঘন্টা , শুরু হবে যাত্রা তোমার অনন্ত জীবনের পথে। ব্যথিত হয়ো না ধনীদের ঐশ্বর্য দেখে অবনত রেখো তোমার দৃষ্টি। সুশপ্ত নিশীথে লুটিয়ে পড়ো রবের দরবারে দুচোখে লাগাও দীর্ঘ অনিন্দ্রার পবিত্র সুরমা । দূরে রেখো হৃদয়কে প্রভৃতির লালসা থেকে জীবন চলার পথে এটি হবে তোমার পরম সাধনা। খেলতামাসায় মগ্ন হয়ে বরবাদ করোনা অমূল্য সময় গুলো।
এই দুনিয়া কর্ম ব্যস্ততায় পূর্ণ ব্যস্ততার একটা দোয়ার খুললেই উন্মুক্ত হয়ে যায় আরো দশটা তাই দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে বেঁচে থাকো।
পূর্বসূরিগন আখেরাতের জন্য সময় ব্যয় করার পর হাতে থাকা অবশিষ্ট সময় দুনিয়ার জন্য বরাদ্দ রাখতেন। কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জন্য সময় ব্যয় করে অবশিষ্ট সময়টা নির্ধারণ করো আখেরাতের জন্য।
দুনিয়া পূজারীদের ধ্বংস অনিবার্য কেননা পার্থীব জীবন ক্ষণিকের সুখ স্বপ্ন দুনিয়ার বিশুদ্ধতাই থাকে দূষণের দৌরাত্ম্য কল্যানেও ওত পেতে থাকে অনিষ্টের মহামারী।
দুনিয়ার মোহ মায়া থেকে বেঁচে থাকা আসলেই অনেক কঠিন ব্যাপার । তা না হলে এত চিন্তা পেরেশানি সত্ত্বেও মানুষ দুনিয়ার পেছনে এত দৌড়াতো না উন্মাদ হয়ে এত প্রতিযোগিতা করত না ।
দুনিয়ার সমৃদ্ধি কেবল দুশ্চিন্তায় বয়ে আনে কেড়ে নেই মানসিক প্রশান্তি । সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে পেরেশনীর মাত্রা যে দুনিয়াকে সম্মান করে দুনিয়া থেকে লাঞ্চিত করে।
মানুষ দীর্ঘ হায়াতের তামান্না রাখে। অথচ জীবনের দৈর্ঘ্য তাকে কেবল কষ্টই দেই চোখের পলকে হারিয়ে যায় মধুময় যৌবনের অমৃত সুখ। বার্ধক্যর তিক্ততাই চেহারায় ফুটে উঠে বয়সের জ্যামিতিক রেখা। জীবনের সেই বিষন্ন বিকেলে বুক জুড়ে কেবল হতাশার হাহাকার শোনা যায়।
আল্লাহ তাআলা সকল অকল্যাণ ও অনিষ্টকে একটি ঘরের মধ্যে রেখেছেন। আর সে ঘড় খোলার একটি চাবি বানিয়েছেন সে চাবির নাম দুনিয়া প্রীতি। তেমনি তিনি সকল কল্যাণকে একটি ঘরে রেখেছেন আর সে ঘরের চাবি হল দুনিয়াবিমুখতা।
প্রয়োজন পরিমাণ জীবন উপকরণ সংগ্রহ করে ক্ষান্ত হও। নিজের জন্য বেছে নাও স্বচ্ছ জীবনধারা। কেননা সবকিছু হারিয়ে যাবে একদিন । নিভে যাবে প্রদীপের ন্যায় তলিয়ে যাবে নিকষ কালো আঁধারে।
শয়তান চাই দুনিয়ার মায়াজালে আমাদের বন্দী করে রাখতে । যদি সে এখানে আমাদের বন্দী করতে পারে তবে আমাদের নির্ঘাত জাহান্নাম