সালাফদের আখলাক

mymensingh shop.com

সালাফদের আখলাক
  • সালাফদের আখলাক_img_0

সালাফদের আখলাক

100 BDT
1

সালাফগন দুনিয়াবি কোন বিষয় নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতেন না। এবং খুশি হতেন না। বরং তারা জামা কাপড় পোশাক পরিচ্ছদ গৃহপালিত জীব জন্তু বিয়ে-শাদী ফুর্তি ক্ষমতার দাপট ইত্যাদি থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন।
সালাফগন প্রত্যেক কাজেই শুরুতে ও শেষে ভয় পেতেন। শুরুতে এজন্য বয় পেতেন যে, হতে পারে সে কাজ তাদের গুনাহ ও তার শাস্তির দিকে নিয়ে যাবে।
আমাশ রহিমাহুল্লাহ বলেন আমরা যানাযায় উপস্থিত হলে কাকে সান্তনা দেব তা বুঝতে পারতাম না, কারণ উপস্থিত সবাই কাঁদতো এবং সকলের মাঝে সুখের ছায়া হয়ে যেত।
এক সালাফ বলেন, আমি আল্লাহর অবাধ্য হলে তার খারাপ প্রতিক্রিয়া আমার গৃহপালিত পশু ও স্ত্রীর মাঝে দেখতে পাই।
আলী ইবন তালিব রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, কারো মাঝে পাঁচটি জিনিস থাকলে সে সৌভাগ্যবান। সে পাঁচটি জিনিস হলো সদালাপি ও বাধ্য স্ত্রী নেককার সন্তান, দ্বীনদার ভাই বন্ধু সৎ প্রতিবেশী স্বদেশে অবস্থান করে উপার্জন।
একবার হাসান রাহিমাহুল্লাহকে এক ব্যক্তি বলে , আমাকে নসিহত করুন । তিনি তাকে নসিহত করেন। তুমি যেখানে অবস্থান করো আল্লাহর বিধি নিষেধকে সম্মান করো । তাহলে আল্লাহ তোমার সম্মান বাড়িয়ে দিবেন।
কেয়ামতের দিন কতগুলো মুখ তাদের খারাপ আমল দেখে মলিন হয়ে যাবে। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত অবস্থায় তাদেরকে রিক্ত হচ্ছে জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।
কত মানুষের তরী নিরাপদে সৈকতে ভিড়বে। আবার কারো তরী বিক্ষুব্ধ তো ঝড় ও বড় বড় ঢেউয়ের মধ্যে ঢুকবে । তবে ইবাদতকারীরা সব ধরনের বিপদের মাঝেও নিরাপদে তটে তরী বিড়াবে।
সালাফদের আখলাক ছিল তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। যখন সবাই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেত তখন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু রবের সাথে ফিসফিসিয়ে কথা বলার লোভে তাহাজ্জুদের দাঁড়িয়ে যেতেন।
আব্দুল আজিজ ইবনে আবু দাউদ রাহিমাহুল্লাহ তাহাজ্জুদের সময় নিজ বিছানা বিছিয়ে দিতেন এবং তাতে হাত রেখে বলতেন আমি জানি তুমি বেশ কোমল তবে এও জানি জান্নাতের বিছানা তোমার থেকে অধিক কোমল। এরপর তিনি ফজর না হওয়া পর্যন্ত তাহাজ্জুতে কাটিয়ে দিতেন।
হাসান বাসরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন বান্দা তখন তাহাজ্জুদ সালাত থেকে বঞ্চিত হয় যখন সে কোন পাপ করে।
তিনি আরো বলেন তার যার গুনাহের বোঝা যত বড় তার কাছে তাহাজ্জুদ সালাত তত কঠিন।
গুনাহে‌ নিমজ্জিত ব্যক্তি তাহাজ্জুদ সালাতে উঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।যদি তুমি দিনের সিয়াম না রাখতে পার এবং রাতে তাহাজ্জুদ সালাত না আদায় করতে পার তাহলে বুঝবে তোমার গুনাহ এসব বরকত থেকে তোমাকে বঞ্চিত রেখেছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যার জীবনের চিন্তা ( লক্ষ্য) হবে আখিরাত আল্লাহ তার অন্তরে সচ্ছলতা দেবেন। তার কর্মকান্ড গুছিয়ে দেবেন এবং দুনিয়া অনুগত ও বাধ্য হয়ে তার নিকট আসবে। আর যার চিন্তা হবে দুনিয়া আল্লাহ তার চোখের মাঝে দারিদ্র রেখে দেবেন, তার কর্মকান্ড বিক্ষিপ্ত করে দেবেন এবং দুনিয়া থেকে সে ততটুকু অর্জন করতে পারবে যা তার জন্য পূর্ব নির্ধারিত।
মালিক ইবনে দিনার রাহিমাহুল্লাহ বলেন দুনিয়ার সাথে যে সংসার পাততে চাইবে দেনমোহর হিসেবে তার গোটা দ্বীনদারীত্বকে বিসর্জন দিলেও দুনিয়া তাতে সন্তুষ্ট হবে না।কাব আল আহবার রাহিমাহুল্লাহ বলেন আমি ইখলাস বিহীন অন্তরে আল্লাহর রাস্তায় এক পাহাড় স্বর্ণ সাদাকা করার চেয়ে তার ভয়ে এক ফোটা চোখের পানি ফেলাকে প্রাধান্য দেই।
যে ব্যক্তি সব ধরনের পাপে মত্ত থাকবে বিচার দিবসে তাকে সব ধরনের পাপী লোকদের সাথে একত্রিত করা হবে। হাশরের ময়দানে একজন আহ্বানকারী ডেকে বলবে হে লোক সকল তোমাদের মধ্যে যারা এই পাপে লিপ্ত ছেলে তারা উঠো । হে আরজ তোমাকেও তাদের সাথে উঠতে হবে।
সালাফগন এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার বুকে ঘর বাড়ি বানানোর ব্যাপারে ছিলেন চরম অনাগ্রহী। তারা ততটুকু ঘর বাড়িই বানাতেন যতটুকু না বানালেই নয়। তাতে বিলাসিতা বা অতিরিক্ত সাজ-সজ্জার কোন নাম গন্ধও থাকতো না। কারণ দুনিয়াতে তাদের কোন চাহিদা ও সৌখিনতা ছিল না।
হাসান বাঁসরী রাহিমাহুল্লাহ বলতেন, এমন লোকদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে যারা দুনিয়াকে নিজেদের কাছে অন্যদের গচ্ছিত আমানত মনে করতেন। যা তার মালিককে ফিরিয়ে দিতে হবে। যেহেতু তারা এই দুনিয়ার কোন কিছুর মালিক নন তাই এতে মায়া না বাড়িয়ে আখেরাত পানে সফর করেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক বলতেন দুনিয়া মুমিনের জেলখানা। আর জেলখানায় সবচেয়ে বড় কাজ হলো সবর করা ও রাগ সংবরণ করা। এই দুনিয়াতে মুমিনদের কোন আবাসস্থল ও দৌলত নেই। তাদের প্রকৃত আবাস ও দৌলত পরকালে।
এক সালাফ বলতেন , আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে চাইলে তোমার ও তোমার প্রবৃত্তির মাঝে একটি ইস্পাতের দেয়াল দাঁড় করিয়ে দাও।
হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করা নেক আমলের ভিত্তি ও দোয়া কবুলের পূর্ব শর্ত। ইউনুস ইবনে উবাই রাহিমাহুল্লাহ বলতেন , এক দিরহাম পরিমাণ অর্থ ও আজ পবিত্র নয়। যদি এক দিরহাম পবিত্র অর্থ পেতাম তবে তা দিয়ে আমাদের অসুখের চিকিৎসা করতাম।